হলধর দাস
‘ শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নের সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম ‘ শীর্ষক জেলা পর্যায়ের মিডিয়াকর্মীদের অংশগ্রহণে ‘Tiphoid Vaccination’ বিষয়ক দিনব্যাপী ‘পরামর্শমূলক কর্মশালা ‘ ৯ অক্টোবর নরসিংদী সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন নরসিংদী’র সিভিল সার্জন ডা: সৈয়দ আমিরুল হক শামীম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, যথাক্রমে নরসিংদী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো: ইউসুফ আলী, নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও আজীবন সাধারণ সদস্য নিবারণ চন্দ্র রায়, নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো: মোবারক হোসেন।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের পক্ষে নরসিংদী জেলা তথ্য অফিসার মো: ওবাইদুল কবির মোল্লা’র সভাপতিত্বে এবং সহকারী তথ্য অফিসার আফসানা আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা: তৃষা জাফরিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক ফজলুল হক, মনজিল এ মিল্লাত, হোসেন আলী প্রমুখ।
ভার্চুয়ালে যুক্ত হন ঢাকা বিভাগীয় তথ্য অফিসের উপপরিচালক মোঃ রিয়াদুল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা: সৈয়দ আমিরুল হক শামীম বলেন, শিশুদের শরীর ও মনন বিকাশে ‘টাইফয়েড ভেকসিন’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। টাইফয়েড পানিবাহিত সংক্রামক রোগ। এটা থেকে আমাদের প্রত্যেককে সাবধান থাকতে হবে। এখন যারা টিকা নিতে সচেতন হবেন না, পরবর্তীতে অনেক টাকা খরচ করে এই টিকা গ্রহণ করতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ডা: তৃষা জাফরিন বলেন,
টাইফয়েড জ্বর (Typhoid Fever) একটি প্রতিরোধ
যোগ্য সংক্রামক রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে। টাইফয়েড জ্বরের প্রকোপ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই টিকা না নিলে এর প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
টাইফয়েড জ্বর পানি বা খাবারের মাধ্যমে বিস্তার ঘটে এবং অন্যান্যদের মাঝে সংক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই জীবাণু একমাত্র মানুষের দেহেই অবস্থান করে এবং ২টি চক্রে বিস্তার লাভকরতে পারে: সংক্ষিপ্ত চক্র (Short-cycle) দূষিত পানি ও খাবার গ্রহণের মাধ্যমে। দীর্ঘ চক্র (Long-cycle)পরিবেশের দূষণের মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
সাধারণত জীবাণু দেহে প্রবেশের পর গড়ে ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে টাইফয়েড জ্বর হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি ৩ দিন থেকে ২ মাস পর্যন্ত হতে পারে। ঘনবসতিপূর্ণ জনগোষ্ঠী,বস্তি বা নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী হলো জ্বরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী।
মহামারিতে আক্রান্ত এলাকায় ভ্রমণকারী নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের অভাব থাকলে টাইফয়েড জ্বর হতে পারে।
টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণসমূহঃ মৃদু জ্বর থেকে দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ মাত্রার জ্বর (১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ক্লান্তি,মাথাব্যথা,কাঁপুনি,ক্ষুধামন্দা, কাশি,শরীর ব্যথা,পেট ব্যথা (কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া থাকতে পারে বা না-ও থাকতে পারে), বমি ভাব বা বমি ইত্যাদি।
নরসিংদী জেলার ৬ টি জেলার ৬ লক্ষ ১৫ হাজার ৭২২ জন ৯ মাস বয়সী শিশু থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু কিশোর কিশোরী টাইফয়েড ভ্যাকসিন দেয়া টার্গেট। এর মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ৪ লক্ষ ১২ হাজার ৪২১ জন। অন্যান্য কমিনিউটির ২ লক্ষ ৩ হাজার ৩০১ জন। ইতিমধ্যে রেজিষ্ট্রেশন করেছে মাত্র ৩৫% । রেজিট্রেশন বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে নরসিংদী জেলা স্কাউটস।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর নরসিংদী জেলা তথ্য অফিসের আয়োজনে স্কাউটস ও গার্লস গাইডদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দিনব্যাপী টাইয়ফেড ভ্যাকসিন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।





