নিজস্ব প্রতিবেদক
সারা দেশে চলমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে ছাত্রলীগ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর হামলা গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ও ৯ দফা দাবী বাস্তবায়নে নরসিংদীতে ছাত্র শিক্ষক ও অভিভাবক পৃথক পৃথক অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে।
৩ আগস্ট বিকেল ৩ ঘটিকা থেকে ৬ টা পর্যন্ত ঢাকা সিলেট মহাসড়কের তরোয়া জেলখানা মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্র ছাত্রী ,অভিভাবক ও জনতা। এসময় তারা রাস্তা বন্ধ করলেও এ্যাম্বুলেন্স চলাচলের সুযোগ করে দেয়। দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করে ও বিভিন্ন প্রকার শ্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে। ৯ দফা দাবী বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সমাবেশের আশেপাশে আইনশৃংখলা বাহিনী ও আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের কোন নেতা কর্মীকে দেখা যায়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নরসিংদী জেলা সমন্বয়কদের একটি ছাত্র প্রতিনিধি দল সন্ধ্যায় নরসিংদী প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তাদের আগামী কর্মসূচী ঘোষণা করেন। কর্মসূচীগুলো হলো; সপ্তাহের প্রতি রবিবার এক দিনের জন্য সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে, অনির্দিষ্ট কালের জন্য নরসিংদী জেলার সকল টেক্সটাইল মিল বন্ধ রাখা, নরসিংদীর বড় বাজার, বাবুরহাট বাজার বন্ধ থাকবে, শুধু ছোট ছোট মুদির দোকানগুলো সকাল ৭টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। জুরুরী সেবা যেমন হাসপাতাল, ফার্মেসি খোলা থাকবে, নরসিংদী সকল পরিবহন রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।
এছাড়া, সমন্বয়করা বলেন, আমরা নরসিংদীতে ইমারজেন্সি মেডিকেল টিম গঠন করছি। যারা আগ্রহী তারা যেন আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন।
সমন্বয়কদের মধ্যে শাহজালাল রহমতুল্লা পরবর্তী কর্মসূচী পাঠ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন আলভী খান, জান্নাতুল ফেরদৌস, আহমেদ ফয়েজ, আব্দুল্লাহ আল মারুফ, সাজিম ফরাজি প্রমুখ সমন্বয়কারী।
একই সময়ে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফরমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
অপরদিকে, নরসিংদীসহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল এবং হত্যার বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে নরসিংদীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকরা।
শনিবার সাড়ে বারোটার দিকে শিক্ষকদের বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের পৌর পার্ক মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে তারা নরসিংদী সরকারি কলেজের সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। বক্তব্য রাখেন প্রভাষক জহিরুল ইসলাম মৃধা, আরিফ পাঠান, মইনুল ইসলাম মিরন প্রমুখ।
এসময় শিক্ষকরা দাবী বলেন, সারাদেশে নির্মমভাবে শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। তাদের যৌক্তিক দাবী মেনে নেয়ার বিপরীতে তাদেরকে দমন-নিপিড়ন করে দমানো যাবে না। অবিলম্বে এই শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের উপর গুলি বন্ধ করতে হবে। আর যদি কোন শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চলে তবে শিক্ষকদের নেতৃত্বে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে। পুলিশ আর কোন শিক্ষার্থীদের বুকে গুলি ছুঁড়লে, পুলিশের সন্তানকে শিক্ষকরা পাঠ দান করবে না বলেও জানায় শিক্ষকরা।