হলধর দাস
আমীরে জামায়াত মুহতারাম ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন,আমরা বৈষম্যহীন মানবিক রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করার অবাধ সুযোগ পাবেন।
আমরা ফকরুদ্দিনের দুই বছর আর শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছর বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছি । বাংলাদেশে একমাত্র রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেড়ে নিয়েছে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার। ফ্যাসিস্ট পালিয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতিনিধিরা এখনও বহাল তবিয়তে আছে। নিবন্ধন ফিরে পেতে আমাদেরকে আজ আদালতের সম্মূখীন হতে হয়েছে। অনতিবিলম্বে আমরা প্রতীক সহ জামায়েতের নিন্ধন ফেরৎ চাই।
আমরা অনতিবিলম্বে মাওলানা আজহারুল ইসলামেরও মুক্তি চাই। মুক্তি না দিলে জামায়াতে ইসলাম আন্দোলনে নামবে।
তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩-৫০ ঘটিকায় নরসিংদী শহরে সাটিরপাড়া কালীকুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আলহাজ্ব মোছলেহ উদ্দিন। নরসিংদী জেলা জামায়াতের সুযোগ্য সেক্রেটারী উপাধ্যক্ষ আলহাজ্ব আমজাদ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য মাওলানা রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় অফিস সেক্রেটারি মাওলানা আ.ফ.ম.আব্দুস ছাত্তার, কেন্দ্রীয় অডিটর মাওলানা আব্দুল মান্নান, সাবেক ছাত্র শিবির সভাপতি জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল জব্বার, কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট মশিউল আলম, কাতার শাখা জামায়াতের আমির হাফেজ আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মমিনুল হক, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা আ.জ.ম.রুহুল আমীন, জেলা জামায়াতের সহকারী সম্পাদক অধ্যাপক মকবুল হোসেন, খেলাফতে মজলিস সদস্য রফিকুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সহকারী সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম,শিবপুর শাখা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান, রায়পুরা শাখার আমীর জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো: রুহুল আমীন প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। তবে আগের মতো নির্বাচন চাই না। সহজে ভালো নির্বাচন আসবে না। একটা ধাক্কা দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করেই নির্বাচন দিতে হবে। মাঠ পর্যায়ে আগের নির্বাচনে যারা সম্পৃক্ত ছিলো, তাদের ভবিষ্যতে কোন নির্বাচনে দেখতে চাই না। তাদের বাদ দিয়ে ফেয়ার নির্বাচন করতে হবে। শেখ হাসিনার আমলে করা দুই লক্ষ জ্বাল ভোটার বাতিল করতে হবে। মৃত ব্যক্তিদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। নতুন ভোটার তালিকা করতে হবে।
৫২ এর ভাষা আন্দোলনে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ভাষা আন্দোলনের দীর্ঘদিন পর আজ ভাষা শহীদ বরকতের মা আজকের দিনেও ঝুপড়ি ঘরে অতিকষ্টে দিন যাপন করছে। এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জাস্কর।
হাসিনা বড় বড় কথা বলেছিল। হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার চুরি করে ২৬ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাঁচার করেছে। চোরের মায়ের বড় গলা। আজকে চোরেরা নাই। চোরের মা’ও নাই। সব পালিয়ে গেছে। তারা এদেশে রাজনীতি করেছে আর তাদের পরিবাররা কানাডায় বেগম পাড়ায় বসবাস করছে।
বিগত আগস্টের ৩ ও ৪ তারিখ ইন্টারনেট বন্ধ করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলো ফ্যাসিস্ট সরকার। হত্যা করে লাশগুলো তারা পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে ছাঁই করে দিয়েছে।
প্রত্যেক গণহত্যাকারীকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা ফ্যাসিস্টদের মতো অবিচার চাই না। আমরা তাদের সুবিচার চাই। সুবিচার হলে তারা হিমালয়ের নীচে চাঁপা পড়বে।
ফ্যাসিস্টরা ঘাটে ঘাটে, জনে জনে চাঁদা আদায় করেছিল। এখনও ফ্যাসিস্টরা চাঁদা আদায় করে চলছে। চাঁদাবাজি,দুর্নীতি,দু:শাসন যতদিন দূর না হবে, ততদিন আমাদের সংগ্রাম চলবে। তাদের আমলনামা গত পরশু সারাবিশ্বের মানুষ জেনে গেছে।
আমরা মানুষ হিসেবে আমাদেরও ভুল হতে পারে। আমরা যার কাছে ভুল করবো, তার কাছে মাফ চাইবো। আর কোন পাপ করে থাকলে আল্লার কাছে মাফ চাইবো।
তিনি নরসিংদীবাসীর দাবীর প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে নরসিংদীতে একটি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট আহ্বান জানিয়েছেন।
বহুবছর পর নরসিংদীসহ আশেপাশের জেলার মানুষ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নরসিংদীর আয়োজনে নিদিষ্ট সময়ে অত্যন্ত সু্ন্দর সুশৃংখল পরিবেশে একটি সফল বিশাল জনসভা উপভোগ করলো।