হলধর দাস
নরওয়ের ” ইউআইটি নর্জেস আর্কটিস্ক ইউনিভার্সিটি ” থেকে বায়োমেডিকেল সায়েন্সে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করার গৌরব অর্জন করেছে রায়পুরা উপজেলার বাঘাইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত মোছলেম ফকির এর পুত্র বালুয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র মোঃ জালাল উদ্দিন । তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল, “Activity-Based Protein Profiling(ABPP) and functional validation of uncharacterized enzymes in bacterial pathogens Staphylococcus aureus and Klebsiella pneumoniae.”
তাঁর গবেষণায়, উন্নত কেমিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া প্যাথোজেন স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস এবং ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়ার জন্য নতুন ওষুধের লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা হয়েছে ।
বাংলাদেশের কৃতি শিক্ষার্থী মোঃ জালাল উদ্দিন এর আবিষ্কার হলো – প্রাণীদেহে স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস এবং ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া হলো অপপোর্টুনিস্টিক প্যাথোজেন, যা সাধারণত আমাদের শরীরে নিয়মিত ব্যাকটেরিয়া হিসেবে অবস্থান করে। তবে, যখন তারা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এড়িয়ে যায়, তখন তারা মারাত্মক জীবন-সংহারক সংক্রমণের কারণ হতে পারে। এসব প্যাথোজেনের চিকিৎসা দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে, বিশেষত অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী স্ট্রেন যেমন MRSA এবং সিআরকেপি (CRKP), যা বর্তমানে বাজারে উপলব্ধ সব অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধী।
নতুন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধের সন্ধানে, এই গবেষণায় উন্নত কেমিক্যাল টুল ব্যবহার করে এই প্যাথোজেনগুলোর মধ্যে ড্রাগেবল টার্গেট এনজাইম শনাক্ত করা হয়েছে এবং কৃত্রিম মিনিগাট (ছোট অন্ত্র) ও প্রাণীদেহে (in vivo) সংক্রমণ
মডেলের মাধ্যমে কার্যকরভাবে যাচাই করা হয়েছে। গবেষণাটি সফলভাবে চারটি নতুন লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত ও যাচাই করেছে, যা জীবন-সংহারক ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ প্রতিরোধে ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
জালাল উদ্দিন ২০০৮ সালে রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বালুয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি, ২০১০ সালে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে বৃত্তি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন শেষে নরওয়ের “ইউআইটি নর্জেস আর্কটিস্ক ইউনিভার্সিটি” থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। গত ৩০ আগস্ট তাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে উক্ত সম্মাননা ডিগ্রি প্রদান করেন।