নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের অধিনস্থ নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার কলেজকে বস্ত্র অধিদপ্তরের অন্তভূক্তির দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর সাহেপ্রতাপ মোড়ে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে তারা যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে তারা বিভিন্ন প্লাকার্ড প্রর্দশন করে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্লোগান দিতে থাকে। পরে বেলা দেড়টায় তারা মহাসড়ক থেকে চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এরআগে বেলা ১২টায় শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের এক দফা দাবি জানায়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কলেজ শাট ডাউন ঘোষণা করে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি জাহিদ হাসান জানায়, দুর্নীতির আতুর ঘর “বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কোন প্রকার শিক্ষার পরিবেশ তৈরি না করে প্রতিষ্ঠানটি একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সারা দেশে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ১০ টি কলেজের ৯টিই বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতাধীন হলেও শুধু মাত্র “নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার কলেজ” ই “বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের আওতাধীন যা শুরুতেই বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে চালু এবং পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বার বার সমস্যা জানানোর পরেও অত্র প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ৬ বছর হলেও প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার আবাসন ব্যবস্থা, কোন প্রকার ল্যাব সুবিধা এবং শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। নাম মাত্র ভূমিকায় একটি গবেষণা মূলক বিএসসি কোর্স চালানো হচ্ছে অথচ অযৌক্তিকভাবে ক্রেডিট আওয়ার ফি এর নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ আদায় করা হচ্ছে শুরু থেকেই। শিক্ষার নূন্যতম পরিবেশ প্রদানে “বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড” পুরোপুরি ব্যর্থ এবং একদল অদক্ষ বস্ত্র প্রকৌশলী তৈরি করছে। যারা পর্যাপ্ত একাডেমি এবং ব্যবহারিক শিক্ষার অভাবে ভবিষ্যতে বস্ত্র খাতে যতেষ্ট ভূমিকা পালনে সহায়ক হবে না। এই বৈষম্য দূর এবং ছাত্রদের নৈতিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমরা ১৮ আগষ্ট হতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এরই প্রেক্ষিতে নরসিংদীর সকল সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে অত্র কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি ও অবেদন পত্র দেওয়া হয়। এরপরও আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনতিবিলম্বে বুটেক্স অধিভুক্ত বাকি ৯ টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মত “নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে” বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতাধীন করা হোক। যতদিন শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক দাবী মেনে নেওয়া না হবে, আমরা আজ থেকে ততদিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ কঠোর কর্মসূচি অব্যাহত করতে থাকবো। যার অংশ হিসেবে আজ থেকে আমাদের কলেজের সকল কোর্সের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা রাজপথকে বেছে নেবে যৌক্তিক অধিকার আদায়ের জন্য।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান, হাসিবুল হাসান, চৈতি দেব কাকন, ইউসুফ আলী, জুবায়ের ইকবালসহ প্রমুখ।
পরে কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর সাহেপ্রতাপ মোড়ে অবস্থান নিয়ে তারা যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় মহাসড়কের উভয়পাশে যানযটের সৃষ্টি হয়। আর ভোগান্তিতে পড়ে দূরপাল্লার যাত্রীরা। পরে পুলিশ জন দূর্ভোগের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের বুঝালে বেলা দেড়টায় তারা মহাসড়ক থেকে সড়ে যায়। পরে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নরসিংদী ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মনুজিৎ নন্দী বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছিলো। আমরা তাদের বুঝিয়েছি, মহাসড়কে অবস্থান করার কারণে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। পরে তারা জনদূর্ভোগের কথা বিবেচনা করে মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর সাথে স্বাক্ষাৎ করেন আন্দোলনকারী প্রতিনিধি দল।